পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ইস্যুতে ইরানের গতিবিধি বোঝা বিশ্ববাসীর দিনদিন কঠিন হয়ে যাচ্ছে। দেশটির কাছে থাকা পারমাণবিক উপাদানগুলো এপর্যন্ত কোনো ধ্বংসাত্মক কাজের জন্য ব্যবহার করা হয়নি এমনটাই দাবি তেহরানের। তবে ইরান তার মিত্রবাহিনীগুলোর সাথে বৈশ্বিক সম্পর্ক দিনদিন তলানিতে ঠেকার দরুন একটি সন্দেহের জন্ম নিয়েছে ইরান যা বলছে তা আদৌ সত্য তো?

এরকম বিশ্বাস অবিশ্বাসের খেলায়ই গত সপ্তাহে এক বিধ্বংসী যুদ্ধ দেখেছে বিশ্ব। ইসরায়েল ও আমেরিকা সরাসরি হামলার লক্ষ্যবস্তু বানায় তেহরানকে সবশেষে দেশটির অভ্যন্তরে থাকা তিনটি পারমাণবিক স্থাপনাকে একযোগ হামলা চালিয়ে ধ্বংস কারার দাবি জানান ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে পারমাণবিক ইস্যুতে ইরান সম্প্রতি এমন কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে যা নিয়ে রীতি মতো চিন্তার ভাজ পড়ে গেছে বিশ্ব নেতাদের কপালে।

পারমাণবিক ইস্যুতে বুধবার ইরানে নতুন একটি বিল পাশ হয়েছে। বৈশ্বিক পারমাণবিক পর্যবেক্ষক গোষ্ঠী আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার আএইএ-এর সাথে সহযোগিতাপূর্ণ আচরণ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমনকি দেশটির কিছু কর্মকর্তা পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি থেকেও বেরিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। আর এতেই বিশ্বের অন্যান্য পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোর মাঝে নতুন করে চিন্তার জন্ম নিয়েছে।

গত সপ্তাহে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার মধ্য দিয়ে ইরানের ভেতরে বেশ ক্ষোভ জমেছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের দাবি, আমেরিকার মধ্যস্ততায় যুদ্ধ বিরতি গেলেও তেহরানের মনে এখনো ক্ষত যে করেই হোক ক্ষতি যতটুকু হয়েছে তা উসুল করতে হবে। তবে অনেকেই মনে করছেন, কোনো ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের দিকে ইরান কখনোই যাবে না যেমনটি তারা আগে বলেছে। তবে ইসরায়েলে ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের ওপর যে প্রমাণহীন অপবাদ এনেছে তার জবাব দেশদুটির পেতেই হবে বলে মনে করছেন অনেকে।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবরের বরাতে জানা গেছে, ইরানি কর্মকর্তারা ইতোমধ্যেই বলেছেন, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরান আর কখনই পারমাণবিক কর্মসূচি গড়ে তুলতে পারবে না। তাবে তার এই দাবি কতটুকু সত্য তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এর আগে ট্রাম্পের নামে কয়েকবার ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। 

নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও কীভাবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে হয় তার অন্য উদাহরণ হতে পারে উত্তর কোরিয়া। তাদের কাছে থাকার পারমাণবিক অস্ত্রের কারণে এখনো বিশ্বের বহু বাঘা বাঘা দেশ তাদের ওপর হামলার সাহস দেখাতে পারে না। এখন প্রশ্ন হলো আগত দিনগুলিতে ইরান কি উত্তর কোরিয়ার মতো কোনো পথে হাঁটবে কিনা।